Skip to main content

দেনমোহর কি ?

দেনমোহর কি ? দেনমোহর হলো কিছু টাকা বা অন্য কিছু সম্পত্তি যা বিবাহের প্রতিদান স্বরূপ স্ত্রী স্বামীর কাছ থেকে পাবার অধিকারী। দেনমোহর নির্ধারণ পদ্ধতি : বর ও কনের উভয়ের দিক বিবেচনা করে দেনমোহর নির্ধারিত হয়। দেনমোহর কত হবে তা নির্ণয়কালে স্ত্রীর পিতার পরিবারের অন্যান্য মহিলা সদস্যদের ক্ষেত্রে যেমন স্ত্রীর বোন, খালা, ফুফুদের ক্ষেত্রে দোনমোহরের পরিমাণ কত ছিলো তা বিবেচনা করা হয়। তা ছাড়া স্ত্রীর পিতার আর্থ-সামাজিক অবস্থানের ভিত্তিতে দেনমোহরের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়। অপর দিকে বরের আর্থিক ক্ষমতার দিকও বিবেচনা রাখা হয়। এসব দিক বিচার বিবেচনা করেই মূলত দেনমোহর নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই স্বামী নূন্যতম ১০ দিরহাম বা সমপরিমাণ অর্থ অপেক্ষা কম নির্ধারণ করতে পারবেন না। #দেনমোহরের প্রকারভেদ দেনমোহরের বাবদ দেয় অর্থ দুই ভাগে বিভক্ত : ১. তাৎক্ষনিক দেনমোহর : তাৎক্ষনিক দেনমোহর স্ত্রী চাওয়ামাত্র স্বামী পরিশোধ করতে বাধ্য থাকে। এ ক্ষেত্রে স্ত্রী তাৎক্ষনিক দেনমোহর না পাওয়া পর্যন্ত স্বামীর সঙ্গে বসবাস ও দেহমিলনের সুযোগ দিতে অস্বীকার করতে পারেন। ২. বিলম্বিত দেনমোহর : দেনমোহরের যে অংশটুকু স্বামীর মুত্যুর পর কিংবা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিয়ে বিচ্ছেদ বা তালাকের পর স্ত্রী পেয়ে থাকে। দেনমোহর আদায়ের আইনি অধিকার তালাকের মাধ্যমে বিবাহ বিচ্ছেদ বা স্বামীর মৃত্যু হলে স্ত্রী তাঁর বিলম্বিত দেনমোহর আদায়ের জন্য পারিবারিক আদালতে মামলা করে তা আদায় করতে পারেন। অবশ্যই তা তালাক বা স্বামীর মৃত্যুর তিন বছরের মধ্যে মামলা করতে হবে। স্বামীর মৃত্যু হলেও বকেয়া দেনমোহর একটি ঋণের মতো। তাই স্বামীর উত্তরাধিকারীরা এটি প্রদানে বাধ্য। তা না হলে মৃত স্বামীর উত্তরাধিকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করে দেনমোহর আদায় করা যায়। কোনো স্ত্রী যদি স্বামীর আগে মারা যান তাহলে দেনমোহর মাফ হয় না। স্ত্রী উত্তরাধীকারীরা এই দেনমোহর পাওয়ার অধিকারী এবং মামলা করার অধিকার রাখেন। #কখন দেনমোহর অর্ধেক দেওয়া যায় ? বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দাম্পত্য মিলনের পূর্বে বিবাহ বিচ্ছেদ হলে কিংবা স্বামীর মৃত্যু হলে সম্পূর্ণ দেনমোহর অর্ধেক দিতে হবে। #স্ত্রী তালাক দিলে কি দেনমোহর দেয়া লাগে? অনেক সময় দেখা যায় বিবাহ বিচ্ছেদের সময় বলা হয় যদি স্ত্রী নিজে উদ্যোগী হয়ে নিজ ইচ্ছায় তালাক দেন তাহলে দেনমোহর পরিশোধ করতে হবে না। এই ধারনাটি সঠিক নয়, স্বামী বা স্ত্রী যেই তালাক দিননা কেন, দেনমোহরের টাকা অবশ্যই স্ত্রীকে প্রদান করতে হয়। কখন দেনমোহর মওকুফ হয় ? স্ত্রী ইচ্ছা করলে তার স্বামী বা স্বামীর উত্তরাধিকারীগনের পক্ষে আংশিক বা সম্পূর্ণ দেনমোহর মওকুফ করে দিতে পারে। এক্ষেত্রে কোন প্রকার প্রতিদান ছাড়াও মওকুফ বৈধ হবে। তবে অবশ্যই মওকুফটি পূর্ণ সম্মতিতে হতে হবে।

Comments

Popular posts from this blog

জামিন অযোগ্য অপরাধের ধারা সমূহ

জামিন অযোগ্য অপরাধের ধারা সমূহ: ৩৫৩, ৩৫৬, ৩৬৪, ৩৬৪ক, ৩৬৫, ৩৬৬ক, ৩৬৬খ-৩৬৯, ৩৭১-৩৭৩, ৩৭৬-৩৮২, ৩৮৫-৩৮৭, ৩৯২-৪০২, ৪০৬-৪১৪, ৪৩৬-৪৪০, ৪৪৯, ৪৫০, ৪৫২-৪৬০, ৪৬৬-৪৬৮, ৪৮৯ক, ৪৮৯খ, ৪৮৯ঘ, ৪৯৩, ৫০৫, ৫০৫ক, ৫১১।

সংবিধিবদ্ধ আইন - Jurisprudence (Class Note)

প্রশ্ন: সংবিধিবদ্ধ আইন কি? ইহা বলা কি সঠিক হবে যে, ফৌজদারী কার্যবিধি সম্পূর্ণরূপে পদ্ধতিগত আইন? বিচারিক পদ্ধতির সাধারণ উপাদানসমূহ ব্যাখ্যা কর। উত্তর: সংবিধিবদ্ধ আইন: আধুনিক জগতে আইন প্রণয়ন একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসাবে বিবেচিত হয়েছে। যথাযোগ্য কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আইনগত বিধিবিধান জারী করাকে আইন প্রণয়ন বলে। ব্যাপক অর্থে আইন সৃস্টির সকল পদ্ধতিই আইন প্রণয়নের অন্তর্ভূক্ত। কিন্তু প্রকৃত অর্থে আইনসভা কর্তৃক সৃস্ট আইনকে আইন বলা হয়। এরূপে প্রণীত আইনকে বিধিবদ্ধ আইন বা সংবিধিবদ্ধ আইন বলে। এই বিধিবদ্ধ আইন রাস্ট্রের সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী সংস্থা প্রণীত হয় এবং উহার পরিবর্তন, সংশোধন, বাতিল করার ক্ষমতা অন্য কোন কর্তৃপক্ষ বা আইন প্রণয়নকারী সংস্থার নাই। তাই বর্তমান যুগে সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী হিসাবে আইন সভাই সংবিধিবদ্ধ আইন প্রণয়ন করে। ফৌজদারী কার্যবিধি সম্পূর্ণরূপে পদ্ধতিগত আইন: পদ্ধতিগত আইন হল ঐ সকল আইন ও বিধি যার দ্বারা স্থায়ী আইন সমূহ বাস্তবে প্রয়োগ ও কার্যকর হয়। অর্থাৎ জনসাধারণ ও সরকারের অধিকার ও কর্তব্য কার্যকর হয়। ফৌজদারী কার্যবিধি আইন হল সেই আইন যার দ্বারা স্থায়ী আইনসমূহ প্রয়োগ হয় এবং জনসাধার...

মূল আইন ও পদ্ধতিগত আইন - Jurisprudence (Class Note)

প্রশ্ন : মূল আইন ও পদ্ধতিগত আইনের সংঙ্গা দাও। এদের মধ্যে পার্থক্য দেখাও। দেওয়ানী কার্যবিধি কি নিছক পদ্ধতিগত আইন - যুক্তি দেখাও। দেওয়ানী বিচার ও ফৌজদারী বিচারের মধ্যে পার্থক্য দেখাও। উত্তর: মূল আইন : যে আইন মানুষের অধিকার নিরুপণ করে তাকে মূল আইন বলে। যেমন - দন্ডবিধি আইন, চুক্তি আইন, সুনির্দস্ট প্রতিকার আইন। পদ্ধতিগত আইন: যে আইন অধিকার প্রয়োগ করে তাকে পদ্ধতিগত আইন বলে। যেমন - ফৌজদারী আইন। পার্থক্য : ১. কোন কাজটি অন্যায় বা অবৈধ তা নির্ধারণ করে মূল আইন । পক্ষান্তরে, কিভাবে সেটি অন্যায় তা প্রমাণ করে পদ্ধতিগত আইন। ২. কোন নির্দিষ্ট অপরাধ আর্থিক দন্ডে দন্ডনীয় না কারাদন্ডে দন্ডনীয় তা মূল আইনগত প্রশ্ন। পক্ষান্তরে, সংক্ষিপ্ত বিচারের অভিযোগ এনে নিয়মিত বিচারে দন্ড দেয়া হবে কিনা তা পদ্ধতিগত আইনের প্রশ্ন। ৩. মৃত্যুদন্ডের বিধান বিলোপ করা হলে তা মূল আইনের পরিবর্তন । পক্ষান্তরে, ঋণের জন্য কারাদন্ডের বিধান বিলোপ করা হলে তা পদ্ধতিগত আইনের পরিবর্তন । “দেওয়ানী কার্যবিধি একটি নিছক পদ্ধতিগত আইন” - দেওয়ানী কার্যবিধি মূল আইন ও পদ্ধতিগত আইনের সংমিশ্রণ। দেওয়ানী কার্যবিধিতে ১৫৫টি ধারা, দ্বিতীয়ভাগে ৫০টি ...